আপনার অনলাইন বিজনেসকে দ্রুত এগিয়ে নিতে ইনস্টাগ্রাম যেভাবে সাহায্য করতে পারে
ব্যবসার প্রসারে ফেসবুক যতটা সাহায্য করতে পারে, ইন্সটাগ্রামও ততটাই। এখনো ব্যবসাকে শুধু ফেসবুকে সীমাবদ্ধ রাখলে বড় ভুল করবেন আপনি। ব্যবসার প্রচার ও কাস্টমারদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার অসাধারণ উপায় ইনস্টাগ্রাম।
যে ১২টি কারণে আজই ইনস্টাগ্রামে আপনার একটি বিজনেস অ্যাকাউন্ট খোলা উচিত:.
#১. অনেক মানুষ এখন ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করে
ইনস্টাগ্রামের দেয়া তথ্যানুসারে, বর্তমানে এতে ১ বিলিয়নের বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারী আছে। যার মধ্যে ৫০০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ নিয়মিতভাবে প্রতিদিন ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করেন। স্ট্যাটিস্টা ডটকমের সেপ্টেম্বর মাসের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে ইন্সটাগ্রাম ইউজারের সংখ্যা ৪৬ মিলিয়ন।
তাই সঠিক কৌশলে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করলে একটা বিজনেস সহজেই অনেক কাস্টমারের কাছো পৌঁছে যেতে পারে।.
#২. ছোট বা বড় যেকোনো আকারের বিজনেসই সাফল্যের দেখা পেতে পারে
সবচেয়ে সেরা কোম্পানিগুলির ক্ষেত্রেও সাফল্য একদিনে আসে না। একটা মার্কেটিং টিম যদি নিজেদের সংস্থাকে সবার নজরে নিয়ে আসতে চায়, তাহলে ইনস্টাগ্রাম তাদের কাজে লাগবে।
সক্রিয় অনলাইন প্রেজেন্স বা উপস্থিতি এবং প্রতিদিন কমপক্ষে একটি পোস্ট করার রুটিন অনুসরণ করলে নিজের টার্গেট অডিয়েন্সের মনোযোগ পাওয়া সহজ হবে। এভাবেই কোকা-কোলা ও অ্যাডিডাসের মতো জনপ্রিয় ব্র্যান্ড আর বিভিন্ন ছোট বিজনেস ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।.
#৩. ইনস্টাগ্রাম থেকে সরাসরি অর্থ উপার্জন করা যায়
প্রতিটি আপডেটের সাথে ইনস্টাগ্রাম বিভিন্ন ধরনের নতুন ফিচার নিয়ে আসছে। এসব ফিচারের একটি হলো অন-প্ল্যাটফর্ম ই-কমার্স সেলস-এর সুযোগ তৈরি করে দেয়া। বর্তমানে পণ্য স্থানান্তরের মাধ্যমে টাকা উপার্জনের প্রতি সবাই জোর দিচ্ছে। ইনস্টাগ্রামের নতুন ফিচারগুলির একটা হলো ‘শপ’ ট্যাব, যা ইনস্টাগ্রামের হোম ডকেই থাকে। এই ফিচারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা সহজেই বিভিন্ন পণ্য খুঁজে পেতে ও ক্রয় করতে পারেন।.
#৪. ‘স্টোরি’ আপনার বিজনেসকে যোগাযোগে আরো সক্ষম করে তুলবে
আপনার কোম্পানি একটা পরিচয়হীন প্রতিষ্ঠানের চেয়েও অনেক বেশি কিছু এটা দেখানোর একটা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে ইনস্টাগ্রাম। অ্যাপটির বিভিন্ন ফিচারের মাধ্যমে এটি করা গেলেও লাইভ পোস্ট ও স্টোরি ব্যবহার করাটা সবচেয়ে ভালো উপায়। এর ফলে আপনি কাস্টমারদের ওপর প্রভাব ফেলতে পারবেন।
আপনার কোম্পানি ও কর্মীদের কাজ ও বিভিন্ন ধরনের ‘বিহাইন্ড দ্য সিন’-এর দৃশ্য দেখানোর মাধ্যমে আপনি সবার মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারবেন। বিভিন্ন পণ্য কীভাবে তৈরি হয়, কর্মীরা একে অন্যের সাথে গল্প করছে, নিজের ও অডিয়েন্সের মধ্যে সরাসরি প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন করতে পারেন।.
#৫. ইনফ্লুয়েন্সারদের সাথে কোলাবোরেশন করতে পারেন
সোশ্যাল মিডিয়ায় সাধারণ ব্যবহারকারীদের পাশাপাশি অনেক ইনফ্লুয়েন্সার আছেন। ইনফ্লুয়েন্সাররা এক ধরনের অনলাইন সেলিব্রেটি যারা প্রায়ই বিভিন্ন ব্র্যান্ড বা পণ্যকে প্রমোট করে সবার নজরে নিয়ে আসেন।
একজন নির্ভরযোগ্য ইনফ্লুয়েন্সার আপনার কোম্পানির বিক্রয় ও প্রচার সম্পূর্ণ অন্য মাত্রায় নিয়ে যেতে পারেন, যেটা সাধারণত আপনি একা পারবেন না। যদি একজন জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েন্সারের সাহায্য নেন, তারা পোস্ট ও স্টোরির মাধ্যমে তাদের ফলোয়ারদের কাছে আপনার কোম্পানি ও পণ্যের কথা পৌঁছে দিতে পারবে।.
#৬. হ্যাশট্যাগ-এর ব্যবহার আপনার পোস্ট বা স্টোরিকে আরও দৃশ্যমান করে তুলবে
নতুন বিজনেস হিসেবে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বীদের কারণে আতঙ্ক বোধ করতে পারেন। তবে, যথাযথভাবে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করলে আপনি প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে নিজেকে আলাদা করে উপস্থাপন করতে পারবেন।
এই হ্যাশট্যাগ তরুণ প্রজন্মের মাঝে বেশ জনপ্রিয়। আপনার কোম্পানি হয়তো কোকা-কোলা বা চার্মিন-এর মতো জনপ্রিয় না, তবে সঠিক হ্যাশট্যাগ ব্যবহারের মাধ্যমে আপনিও নিজের প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে অনেক সামনে এগিয়ে যেতে পারবেন।.
#৭. সহজ ও কার্যকরভাবে কাস্টেমারদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন
মানুষ নিজেদের পছন্দ-অপছন্দের কথা সবাইকে জানাতে পছন্দ করে। ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে সবাই নিজেদের প্রিয় পোস্টটি লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করতে পারে। আপনি যত বেশি লাইক ও কমেন্ট পাবেন, আপনার কোম্পানি তত পরিচিত ও দৃশ্যমান হবে। হাই কোয়ালিটির ছবি, স্থানীয় হ্যাশট্যাগ ও অন্যান্য ব্র্যান্ডের সাথে কাজ করার মাধ্যমে আপনি বেশি লাইক পেতে পারেন।.
#৮. সক্রিয় থাকাই মূল বিষয়
মোবাইল হাতে ৯০% সময়ই আমরা কোনো না কোনো অ্যাপে কাটাই। আপনার কোম্পানির উচিত এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করা এবং দর্শকরা সব জায়গা থেকেই যাতে আপনার পোস্ট দেখতে পায় এই ব্যবস্থা করা।
স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা সাধারণত ফেসবুকের তুলনায় ইনস্টাগ্রাম বেশি ব্যবহার করেন, কারণ ইনস্টাগ্রামের স্টাইল ফেসবুকের তুলনায় বেশ পরিষ্কার ও গোছালো। ইনস্টাগ্রামের অ্যানগেজমেন্টও ফেসবুকের চেয়ে ১০ গুণ বেশি, তাই ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারে আপনি বেশি লাভবান হবেন।.
#৯. প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর নজর রাখতে পারবেন
প্রতিদ্বন্দ্বীরা কেমন করছে ও তাদের ফলোয়ারদের সাথে কীভাবে যোগাযোগ করছে তার দিকে নজর রাখতে আপনার কোম্পানি ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করতে পারে।
তারা কত সময় পর পর পোস্ট করে, কী পোস্ট করে, ফলোয়ারদের সাথে কীভাবে যোগাযোগ করে তা সতর্কভাবে লক্ষ্য করুন। নিজের ব্যক্তিগত কৌশলকে ভালোভাবে সংজ্ঞায়িত করতে এই তথ্যগুলি ব্যবহার করতে পারবেন।.
#১০. এতে সৃজনশীলতা বাড়ানোর সুযোগ পাওয়া যায়
ছবি শেয়ার করার এই মাধ্যমের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো সৃজনশীলতার সুযোগ। ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ার ও নতুন ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণে অনেক সৃজনশীল উপায় খুঁজে বের করতে পারে আপনার মার্কেটিং টিম।
বিভিন্ন কনটেস্ট, শাউট আউট, স্পষ্ট ছবি, ভিডিওসহ আরো অনেক উপায়ে কাস্টমারদের জানান দিতে পারে যে আপনাদের কোম্পানির নিজস্ব ব্যক্তিত্ব আছে এবং এই কোম্পানি থেকে শপিং করে সবাই আনন্দ পাবে।.
#১১. ইনস্টাগ্রামের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে নতুন ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারবেন
ইনস্টাগ্রামের অ্যাডের মাধ্যমে সহজেই নতুন কাস্টমারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারবেন। ইনস্টাগ্রাম অ্যাড ট্র্যাক ও কাস্টমাইজ করা যায়, অর্থাৎ আপনি নিজের সুবিধামতো সাজিয়ে উপস্থাপন করতে পারবেন।
আপনি একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে নিজের টার্গেট অডিয়েন্স বানাতে পারেন, তাদের আপনার ওয়েবসাইটের সাথে লিংক করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন। এই তথ্য আপনার অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ক্যাম্পেইনগুলির কাজে লাগতে পারে।.
#১২. ইনসাইট ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ে কৌশল শাণিয়ে নিন
মার্কেটিংয়ের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার নতুন নতুন শুরু করলে ইনস্টাগ্রাম ইনসাইট আপনার জন্য খুব সহায়ক হবে। ইনস্টাগ্রাম ইনসাইট আপনার ফলোয়ার ও কন্টেন্টের পারফরম্যান্স সম্পর্কে নির্দিষ্ট ও প্রাসঙ্গিক তথ্য দেবে। এই তথ্য ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের প্রসার ঘটাতে পারেন।
ইনসাইটের মাধ্যমে ফলোয়ারদের বয়স, জেন্ডার, তারা কোন এলাকায় থাকেন, কোন সময়ে তাদের অ্যাপটি ব্যবহারের সম্ভাবনা বেশি, আপনার প্রত্যেকটি পোস্টের পারফরম্যান্স কেমন, দিনের কোন সময় পোস্ট করলে সবার দেখার সম্ভাবনা বেশি থাকবে ইত্যাদি সবকিছুই জানতে পারবেন।
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷