মধ্যরাতে মদ্যপ অবস্থায় বেপরোয়া স্পর্শিয়া
রাজধানীতে মধ্যরাতে বেপরোয়া গতিতে চালানো গাড়ি থেকে মদ্যপ অবস্থায় পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন মডেল-অভিনয়শিল্পী অর্চিতা স্পর্শিয়া ও তার বন্ধু প্রাঙ্গণ দত্ত অর্ঘ্য।
পুলিশের দাবি, বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) মধ্যরাতে পথ আটকানোর পর সড়কেই ঘণ্টাখানেক মাতলামি করেন তারা। পরে তাদের ধানমন্ডি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তবে রাতেই মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন উভয়ে।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১২টার দিকে ধানমন্ডি সাতমসজিদ সড়কে বেপরোয়া গতিতে একটি লেক্সাস মডেলের (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৭-৪০৭২) গাড়ি যাচ্ছিল। ইউনিমার্টের সামনে পুলিশ গাড়িটি থামায়। তখন চালকের আসনে ছিলেন প্রাঙ্গণ দত্ত অর্ঘ্য। তার পাশে বসেন স্পর্শিয়া। দুই জনই মদ্যপ অবস্থায় মাতলামি ও কর্তব্যরত পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করতে থাকেন। এ সময় দ্রুতগতির আরেকটি গাড়ি এসে দাঁড়ায়। কিছুক্ষণ পর গাড়িটি চলে যায়। এর পর তারা দুজন ধানমন্ডি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুবের ওপর চড়াও হন। পরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে তাদের থানায় নিয়ে যেতে বলা হয়। তবে স্পর্শিয়া ও অর্ঘ্য থানায় যেতে অস্বীকৃতি জানিয়ে গাড়ির ব্যাকডালা খুলে সেখানেই বসে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে যায়। এরপর স্পর্শিয়া ও অর্ঘ্যের স্বজনরা মুচলেকা দিয়ে উভয়কে ছাড়িয়ে আনে।
প্রাঙ্গণ দত্ত অর্ঘ্য মুচলেকায় বলেন, ‘...আমি গাড়িটি থামিয়ে দায়িত্বরত পুলিশ অফিসারের সঙ্গে কথা বলার সময় হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে যাই এবং পুলিশের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করি। আমি মদ্যপ অবস্থায় আছি কিনা পুলিশ জানতে চাইলে, অল্প মদ পান করেছি বলে জানাই এবং এটাও বলি আমার মদপানের লাইসেন্স আছে। পুলিশকে তৎক্ষণাৎ লাইসেন্স দেখাতে ব্যর্থ হই। মদ্যপ অবস্থায় অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানো এবং পুলিশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হওয়ায় থানার ঊর্ধ্বতন অফিসার আমার সঙ্গে ফোনে কথা বলে থানায় যেতে বলেন। আমি গাড়িসহ থানায় হাজির হই।’
অর্ঘ্য মুচলেকায় যোগ করেন, ‘এই মর্মে মুচলেকা দিচ্ছি যে ভবিষ্যতে এমন কার্যকলাপ আর করবো না। অতিরিক্ত গতিতে আর গাড়ি চালাবো না। সাক্ষীদের উপস্থিতিতে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে দেওয়া এই মুচলেকায় স্বাক্ষর করলাম।’
মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো ও থানায় যাওয়া প্রসঙ্গে জানতে একাধিকবার স্পর্শিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এমনকি প্রাঙ্গণ দত্ত অর্ঘ্যের বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনিও সাড়া দেননি।
জানা গেছে, প্রাঙ্গণ দত্ত অর্ঘ্যের বাবার নাম প্রদীপ কুমার দত্ত। তিনি সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ২০১৬ সালে অবসর নিয়েছেন। সিদ্ধেশ্বরীর অপ্সরা অ্যাপার্টমেন্টে বাবার সঙ্গে থাকেন প্রাঙ্গণ। নিজেকে একজন সিআইপি হিসেবে দাবি করলেও প্রাঙ্গণ কী ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত তা জানা যায়নি।
অপরদিকে অর্চিতা স্পর্শিয়া ২০১১ সালে একটি বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবে বিনোদন অঙ্গনে নিজের নাম লেখান। তিনি টিভি নাটকের পাশাপাশি একাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ২০২০ সালে ‘নবাব এলএলবি’ ছবিতে পুলিশকে হেয় করে সাজানো একটি দৃশ্যে অভিনয়ের জন্য আলোচনায় আসে তার নাম। তখন ছবিটির পরিচালক অনন্য মামুন ও অভিনেতা শাহিন মৃধাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷