ঘর সাজানোর ১২টি ভুল
বাসা সাজানোর সময় ছোটখাটো অনেক ভুল আমরা করে থাকি। পেশাদার ডিজাইনাররাও ভুল করেন, এ নিয়ে মন খারাপ করার কোনো কারণ নেই।
কিন্তু কখন ভুল করছেন তা বোঝা জরুরি। মাঝে মাঝে এই বিষয়টাও কঠিন হয়ে ওঠে। ঘর সাজানোর সময় সাধারণত কোন ভুলগুলি হয়ে থাকে, এর মধ্যে আপনি কোন ভুলগুলি করছিলেন আর কীভাবে এগুলি এড়িয়ে চলা যাবে তা নিয়ে আজকের লেখা।
.
#১. সব রুম আলাদা করে সাজানো
একেকটা রুম একেকরকম করে সাজাতে চাওয়া খুব সাধারণ বিষয়। কিন্তু প্রতিটি রুমকে অন্য রুমের চেয়ে আলাদা করতে গিয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এমনভাবে সাজিয়ে ফেলি আমরা যে অন্য রুমগুলির সাথে কোনো কিছুতেই মিল থাকে না।
রুম সাজানোর সময় সব রুমের মধ্যে কোনো না কোনো ক্ষেত্রে মিল রাখুন, হতে পারে সেটা রঙের দিক দিয়ে, অথবা অন্য কিছু।
.
#২. আসবাবপত্র নির্বাচনের আগে দেয়াল রঙ করা
ডেকোরেশনের সময় এই ভুলটি সচরাচর করতে দেখা যায়। আমরা প্রায়ই অনেক সূক্ষ্ম বিষয় বিবেচনায় না নিয়েই রুমের কালার প্যালেট নির্ধারণ করে ফেলি। ফার্নিচার বা আসবাবপত্র নির্বাচন না করে দেয়ালের রঙ নির্ধারণ করবেন না। তাতে করে ফার্নিচারের সঙ্গে দেয়ালের রঙ মানানসই নাও হতে পারে।
.
#৩. অসামঞ্জস্যপূর্ণ আসবাব ব্যবহার করা
ঘর সাজাতে গেলে আসবাবপত্রের আকার বিবেচনা করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ঘরের আসবাবপত্র ও অন্যান্য অনুষঙ্গ কেনার সময় সঠিক আকার দেখে কিনতে হবে। তাই, আসবাবপত্রের দোকানে গেলে এই বিষয়টি মাথায় রাখুন। দোকানে একটা সোফা দেখতে অসাধারণ লাগলেও আপনার লিভিং রুমে সেটা নাও মানাতে পারে।
.
#৪. কার্যকারিতা বিবেচনা ছাড়াই লুক পছন্দ করা
সোফা, টেবিল বা ল্যাম্প কেনার আগে কেবল সেটার সৌন্দর্য দেখলেই হবে না, সেটার কার্যকারিতা ও স্বাচ্ছন্দ্যের কথাও ভাবতে হবে। কেনার আগে সোফায় বসতে কেমন লাগে কিংবা আপনার ডেস্ক বা বই পড়ার কর্নারে আসলেই একটা ল্যাম্প লাগবে কিনা সেদিকে খেয়াল করুন।
.
#৫. সব ফার্নিচার দেয়ালের সাথে লাগিয়ে রাখা
এটা খুব সাধারণ ভুল আমরা সবাই করে থাকি। আমরা বুঝতে পারি না আমাদের হাতে আরও অনেক অপশন রয়েছে। দেয়ালের সাথে লাগিয়ে সব ফার্নিচার রাখলে একটা জায়গা দেখতে হলওয়ের মতো লাগে আর সেখানে কেউ কোনো আলাপ করতে বা কারো সাথে কথা বলতে আগ্রহ পায় না। তাই, এই কাজটি এড়িয়ে চলতে হবে, বিশেষ করে লিভিং বা ড্রয়িং রুম-এ।
.
#৬. অপর্যাপ্ত আলোর ব্যবহার
লাইটিংয়ের ক্ষেত্রে সঠিক ব্যালেন্স খুঁজে পাওয়া কঠিন কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। আপনি একটা রুমে খুব সহজেই খুব বেশি কিংবা খুব কম কৃত্রিম আলো ব্যবহার করতে পারেন। আর কোনো ক্ষেত্রেই রুমটি আরামদায়ক হবে না। ডিমার ব্যবহার করে এই সমস্যা কিছুটা সমাধান করা যায়। তাছাড়া অ্যাকসেন্ট লাইটিং ও টাস্ক লাইটিং-এর কথাও বিবেচনা করতে হবে।
.
#৭. রুমে অতিরিক্ত জিনিসপত্র রাখা
আমরা অনেকেই একটা রুমকে আরামদায়ক করে তুলতে গিয়ে অতিরিক্ত ফার্নিচার ও অনুষঙ্গ রাখি। এর ফলাফল হয় উল্টোটা। রুমে চলাফেরার জায়গা কমে যায়।
.
#৮. নিচু করে পর্দা টানানো
পর্দার ওপর একটা রুমকে দেখতে কতটুকু মনে হবে তা নির্ভর করে। পর্দা নিচু করে টানালে রুম দেখতে ছোট ও লম্বায় দৈর্ঘ্য কম মনে হয়।
.
#৯. ঘরের প্রবেশপথ না সাজানো
প্রবেশপথ ঘরের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গা। এই জায়গাটা আপনার বাসা সম্পর্কে প্রথম ইমপ্রেশন তৈরি করে, মেহমানরা বাসায় এসে প্রথমে এই জায়গাটাই দেখে। তাই প্রবেশপথকে এড়িয়ে গেলে চলবে না।
এই জায়গাটাকে যথাসম্ভব উষ্ণ ও অভ্যর্থনার যোগ্য করে তুলতে হবে, তাই এখানে নিজস্ব ছোঁয়া লাগাতে ভুলবেন না।
.
#১০. অপছন্দের জিনিস দিয়ে ঘর সাজানো
আপনার কী ভালো লাগবে আর কী লাগবে না সেটা আপনার চেয়ে ভালো কেউ বুঝবে না। আপনি হয়তো এখন মেনে নিয়ে ঘর সাজালেন, কিন্তু এই ঘরটিতে আপনাকেই থাকতে হবে। অপছন্দের জিনিস দিয়ে সাজানো ঘর আপনার মনে শান্তি বা আনন্দের অনুভূতি তৈরি করবে না। তাই যখন সাজানোর উপকরণ কিনছেন, সময় নিয়ে ভেবে কিনুন।
.
বাসা শুধু থাকার জায়গা নয়, আপনার স্বস্তি ও বিশ্রামেরও জায়গা। নিজের পছন্দ ও ভালো লাগাকে গুরুত্ব দিয়ে সেই জায়গাটিকে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলুন।
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷