Breaking News

নতুন বছরে নিজের উন্নতির জন্য যে ৫টি কাজ করতে পারেন

 আত্মোন্নয়নের বাইরেও প্রতি বছরই আমরা নানারকম নিউ ইয়ার রেজোলিউশন বা নতুন বছরে কে কেমনভাবে চলতে চাই তা ঠিক করি। এক্ষেত্রে আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দেই কী হতে চাই তার ওপর। এতে করে অনেক সময় করা অসম্ভব এমন লক্ষ্যের একটা লিস্ট তৈরি হয়ে যায়।


আপনার ক্ষেত্রেও যদি তাই হয়, তাহলে গোল সেটিংয়ের আগে কিছু জিনিস চর্চার মাধ্যমে নতুন বছর শুরু করতে পারেন। ছোট ছোট দরকারি অভ্যাস চর্চা আপনাকে আগের চেয়ে আরো এগিয়ে রাখবে। তারপর গোল তৈরি কাজ করুন। নতুন বছরে যে ৫টি অভ্যাস চর্চা করতে পারেন:
.
#১. সময়ানুবর্তী হোন
আপনি কি সব জায়গায় দেরিতে গিয়ে পৌঁছান? সময় হাতে থাকলেও কি এই সমস্যা প্রতিবার হয়?
এমন যদি হয়, তাহলে আপনি ‘সময়ানুবর্তী’ নন। অর্থাৎ, সময়মতো কাজ করতে পারেন না।
সময়ানুবর্তীতার সমস্যাটি হয় মূলত গুরুত্ব অনুসারে কাজ সাজাতে না পারলে। ধরুন, আপনার সকাল ৮টায় অফিসের জন্য বেরিয়ে যেতে হয়, আপনি যদি সাড়ে ৭টায় ঘুম থেকে ওঠেন, তাহলে অফিসে যেতে অনেক দেরি হয়ে যাবে। এজন্য আগে দেখতে হবে অফিসে যাওয়ার আগে আপনাকে কী কী কাজ করতে হচ্ছে।
বিছানা গোছানো, নাস্তা তৈরি, খাওয়া, ব্যাগ গুছানো, রেডি হওয়া এই সব কাজ করতে আপনার আনুমানিক কতটুকু সময় লাগতে পারে এবং কতটুকু সময়ের মধ্যে কাজগুলি করতে চান তা ঠিক করুন। পরে করলেও চলবে এমন কাজ পরের জন্য রাখুন, করতেই হবে এমন কাজগুলি সকালে করতে হলে কখন ওঠা ভালো তাও ঠিক করুন। এর মধ্যেই পরিপূর্ণ ঘুম হওয়াও নিশ্চিত করুন।
.
#২. জার্নালিং শুরু করুন
জার্নালিং শুনতেই অনেক কষ্টের কাজ মনে হতে পারে। প্রতিদিন লেখাটা অনেকে ঝামেলা হিসেবেও দেখেন। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত জার্নালিং আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
নিজের সম্পর্কে আরো গভীরভাবে জানতে ও নিজের সঙ্গে আরো ভালো সম্পর্ক তৈরিতে জার্নালিং সাহায্য করে। প্রতিদিন মাত্র ৫ মিনিট এর পেছনে সময় ব্যয় করলে অনেক কিছু সামাল দেয়া আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে।
দৈনন্দিন জীবনের স্ট্রেস তার মধ্যে অন্যতম। নিজের পছন্দমতো একটা সময় বাছাই করুন। যখন আপনি শান্ত হয়ে বসে কাজটা করতে পারবেন। ভাবুন, সারাদিন কী কী করলেন, কোনো ঘটনা আপনাকে আলাদাভাবে নাড়া দিয়েছে কিনা, কোন ঘটনা আপনাকে আনন্দ দিয়েছে, কোনো নতুন অভিজ্ঞতা হলো কিনা—এইসব কিছু ছোট করে লিখে রাখুন।
দারুণ ব্যাপার হলো, এক মাস পরেই যখন আগের পাতাগুলির দিকে তাকাবেন, দেখবেন যে অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে আপনার যেটা না লেখা থাকলে টের পেতেন না।
.
#৩. পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার কার্যকর উপায় শিখুন
পুরো বাসা গোছানো অবশ্যই সহজ কাজ না। কাজটা আরো কঠিন হয়ে যায় যখন সারাদিনব্যাপী সেটা একই রকম গোছানো রাখতে চাইবেন।
পরিবারের সদস্য বেশি হলে বা বাসায় বাচ্চা থাকলে এই কাজটি প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। তাহলে ঘর গোছগাছ রাখতে আপনি সারাদিন ব্যয় করবেন কি?
এজন্য কিছু নিয়ম তৈরি করতে হবে আপনার। প্রথমত বাসার সদস্যদের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলুন। তারা যেন তাদের অংশের দায়িত্বটি পালন করেন। তাহলে আপনার ওপর থেকে চাপ কমবে। এরপর কাজগুলোকে গুরুত্ব ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে ভাগ করুন। অর্থাৎ, কোন কাজগুলি প্রতিদিন করতে হয়, কোন কাজগুলি সপ্তাহে দু’দিন করলেও চলবে।
বাসার সবার মধ্যে কাজ বণ্টন করে দিন, কোনো একটা দায়িত্ব নির্দিষ্ট কাউকে দিতে পারেন। তাহলে আপনার সময়ও বাঁচবে, চাপও কমবে।
.
#৪. আরেকটু বুঝে-শুনে খরচ করুন
অনলাইন বিজনেসের দ্রুত প্রসারের কারণে প্রায় সব পরিবারেই খরচ বেড়ে গেছে। জিনিসের অসংখ্য অপশন ও সহজলভ্যতা এর একটি কারণে। কিন্তু আপনার আয়ের যদি অনেক বড় অংশ খরচ হয়ে যায় বাড়তি কেনাকাটায় তাহলে সেভিংস বা আর্থিক লক্ষ্য কখনোই পূরণ করতে পারবেন না।
এজন্য আগে আপনার ইনকাম ও প্রাথমিক খরচের খাতগুলি নিয়ে একটা হিসাব করুন। তারপর বাড়তি কেনাকাটায় কী পরিমাণ খরচ হচ্ছে তা দেখুন। সেটা যদি আপনার উন্নতির জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাহলে একটা পরিমাণ ঠিক করুন প্রতিমাসের জন্যে যে, এর বাইরে আর কোনো টাকা খরচ করবেন না ওই মাসে।
যদি খরচ করতে ইচ্ছা হয়ও, নিজেকে এই দুটি প্রশ্ন করুন:
• “আমার কি এই জিনিসটা আসলেই দরকার?”
• “এই টাকাটা জমালে কি আমি কোনোভাবে উপকৃত হতে পারি?”
এই প্রশ্নগুলি আপনাকে আর্থিক সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আরো দায়িত্বশীল হতে সাহায্য করবে। আপনাকে আপনার আর্থিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণেও সাহায্য করবে।
.
#৫. হাঁটুন
জীবনের যেকোনো লক্ষ্য পূরণের জন্য শারীরিক সুস্থতা সবচেয়ে প্রাথমিক ও জরুরি বিষয়। শারীরিক সুস্থতার সঙ্গে আপনার মানসিক স্বাস্থ্যও যুক্ত। প্রতিদিন আধা ঘণ্টা হাঁটতে চেষ্টা করুন।
যেদিন হাঁটতে না পারছেন বাসায় এক্সারসাইজ করুন। ঘরে বসে একা একা করার মত অসংখ্য এক্সারসাইজের টিউটোরিয়াল পাবেন অনলাইনে।এক্সারসাইজের নানা ধরনের মধ্যে আপনার কোনটা ভালো লাগে তাও দেখতে পারেন।
যদি একই রকম এক্সারসাইজ প্রতিদিন করতে ভালো না লাগে তাহলে একেক দিন একেক রকম এক্সারসাইজ করুন। সবসময় এক্সারসাইজ পূর্ববর্তী প্রস্তুতি বা ওয়ার্ম আপ সম্পন্ন করুন।
.
প্রতিটি নতুন বছরই আমাদের জন্য অসংখ্য সম্ভাবনা ও সুযোগ নিয়ে আসে। নিজের উন্নয়নে মনোযোগী হওয়ার পাশাপাশি সেগুলির ব্যাপারেও সচেতন থাকুন।
নিজেকে ভালোবাসুন ও ক্ষমা করার মানসিকতা রাখুন।
মনে রাখুন, যা’ই করুন না কেন নিজের ওপর বাড়তি মানসিক চাপ পড়তে দেবেন না। অল্প অল্প করে আগাতে আগাতে দেখবেন অনেকটাই পথ চলে এসেছেন। আগে থেকে দুশ্চিন্তা না করে অভিজ্ঞতা নেয়ার সময়টাও উপভোগ করুন।

কোন মন্তব্য নেই

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷