Breaking News

আশুলিয়ার চাঞ্চল্যকর ০৫ বছরের শিশু ধর্ষণ মামলার পলাতক আসামি দুলাল’কে জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪

 র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র‌্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের নৃশংস ও ঘৃণ্যতম অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। ধর্ষণের মতো ঘৃণ্যতম অপরাধ নির্মূলের জন্য র‌্যাবের প্রতিটি সদস্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে নারী ও শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ বাসযোগ্য সমাজ তথা দেশ বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

ভিকটিমের পিতা-মাতা ভিকটিমসহ আশুলিয়ার চারাবাগ এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়টিয়া হিসেবে বসবাস করে আসছে। ভিকটিমের মা একটি গার্মেন্টসে এবং পিতা সাইকেল-রিক্সা মেকানিক হিসেবে কাজ করে। গ্রেফতারকৃত আসামী একই এলাকার একটি গার্মেন্টসে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কাজ করত। পাশাপাশি বাসায় থাকায় শিশু ভিকটিমের সাথে আসামীর মধ্যে বন্ধুবৎসল সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আসামী দুলাল প্রায়শ ভিকটিমকে চিপস্ ও চকলেট কিনে দিত। এই সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে গত ০৬ অক্টোবর ২০২১ তারিখে আনুমানিক রাত্রি ০৮.০০ ঘটিকার সময় ভিকটিম এর পিতা-মাতা বাসায় না থাকার সুযোগে আসামী দুলাল সুকৌশলে ভিকটিমকে বিস্কুট কিনে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে পা জনৈক সালাউদ্দিনের ভাড়া বাসার পাখির ঘরের ভিতর নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। তৎক্ষণাৎ ভিকটিম চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন জড়ো হয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার করে এবং আসামী দুলাল পালিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। উক্ত ঘটনার পরে ০৬ অক্টোবর ২০২১ তারিখে ভিকটিমের মা বাদি হতে আশুলিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত ঘটনায় প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিকস্ মিডিয়াসহ পার্শবর্তী এলাকায় চাঞ্চল্যে সৃষ্টি হয়। ফলশ্রুতিতে র‌্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল পুলিশের পাশাপাশি আসামী গ্রেফতারে ছায়া তদন্ত শুরু করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা সংবাদ ও স্থানীয় সোর্সের সহায়তায় জানা যায় যে, আসামি মোঃ দুলাল (৫৫) বগুড়া জেলার দুর্গম চর কাজলা টেংরাকুরা এলাকায় অবস্থান করছেন এবং আগামী দু'দিনের মধ্যে সে অবৈধভাবে বর্ডার যোগে পার্শ্ববর্তী দেশে প্রবেশ করবেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে , র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল গত ২৭ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ রাত ১০.০০ ঘটিকায় বগুড়া জেলার কাজলা টেংরাকুরা এলাকার উদ্দেশ্যে গমন করে। টেংরাকুরা এলাকা এমন একটি প্রত্যন্ত এলাকা যেখানে পায়ে হেঁটে বালু পথে অভিযানিক দলকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার আনুমানিক ০২ ঘণ্টা হেঁটে যেতে হয়। সন্দেহভাজন স্থানে গিয়ে অভিযানিক দলটি জানতে পারে যে, তাদের উপস্থিতি বুঝতে পেরে আসামি মোঃ দুলাল (৫৫) উক্ত স্থান থেকে পলায়ন করেছে। তারপর আভিযানিক দলটি আশেপাশের সকল এলাকায় সাঁড়াশি তল্লাশি অভিযান চালায়। এক পর্যায়ে অভিযানের দলটি জানতে পারে যে, আসামি দুলাল বগুড়া থেকে জামালপুর এলাকায় চলে এসেছে। সে জামালপুরের মাদারগঞ্জ থানার মির্জাপুর উত্তরপাড়া দুর্গম চরে অবস্থান করছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত আভিযানিক দল, বর্ণিত জামালপুর এলাকায় গমন করে। সেখান থেকেও আসামি মোঃ দুলাল (৫৫) পলায়ন করে। অতঃপর, অভিযানিক দল উক্ত এলাকায় সাঁড়াশি তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করে। এমত অবস্থায় এক পর্যায়ে অদ্য ২৮ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ ভোর ০৩.৩০ ঘটিকার সময় মির্জাপুরের উত্তরপাড়া নিবাসী মোজা কামারের বাড়ির পেছনের ডোবা (পচা পানির ডোবা) থেকে উক্ত চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার পলাতক আসামী মোঃ দুলাল, জেলা-জামালপুর’কে (৫৫) গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামী দুলাল উক্ত দিনে ভিকটিমকে বিস্কুট ও চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে পার্শবর্তী জনৈক সালাউদ্দিনের বাসায় নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের চিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসলে সে পালিয়ে আত্মগোপনে ছিল। আত্মগোপনে থাকাকালে আসামী দুলাল বিগত ০৫ মাসে নিয়মিত তার অবস্থান পরিবর্তন করে আসছিল। সে সব সময় দুর্গম এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলকে আত্মগোপনের জন্য বেছে নেয়। আত্মগোপনকালে সে দিনাজপুর জেলার দুর্গম অঞ্চল, নেত্রকোনা জেলার প্রত্যন্ত চর, বগুড়া জেলার কাজলা টেংরাকুরা দুর্গম ও প্রত্যন্ত চর এলাকা এবং জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ থানার মির্জাপুর উত্তরপাড়া প্রত্যন্ত চর এলাকায় অবস্থান করে আসছিল। জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, সে এর মধ্যে বেশ কয়েকবার অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশে গমন করেছেন এবং পলায়নের চেষ্টা করেছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। অদূর ভবিষ্যতে এইরুপ অপরাধীদের বিরুদ্ধে র‌্যাব-৪ এর অভিযান অব্যাহত থাকবে।

কোন মন্তব্য নেই

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷