‘বঙ্গবাজারের ঘটনায়ও দিয়েছি, উত্তরার দুর্ঘটনায়ও পাশে আছি’: রক্ত দিতে আসা তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী
ঢাকা, ২২ জুলাই ২০২৫:
উত্তরার সাম্প্রতিক বিমান দুর্ঘটনার পর আহতদের জন্য রক্তদানে এগিয়ে এসেছে সমাজের এক অবহেলিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী — তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরা। তারা বলছেন, দেশের দুর্যোগে, বিপদে তারা আগেও ছিলেন, এখনও আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন।
সোমবার সকাল ১০টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দেখা যায়, কয়েকজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ রক্তদানের লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। এদের একজন, নাম শিলা, বলেন,
“বঙ্গবাজারে আগুন লাগার সময়ও আমরা রক্ত দিয়েছি। আজকেও যখন শুনলাম উত্তরায় দুর্ঘটনা হয়েছে, অনেক মানুষ আহত — তখন আর ঘরে থাকতে পারিনি।”
তারা জানান, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের অনেকেই রক্ত দিতে চাইলেও নানা বাধার মুখে পড়েন। কেউ কেউ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনিচ্ছার শিকার হন, কেউ আবার সাধারণ মানুষের কটূক্তির।
আরেকজন, রুবি, বলেন:
“আমরা মানুষ। আমাদের শরীরেও রক্ত আছে, মন আছে। দুঃখ-সুখ বুঝি। আমাদের রক্তও কারও জীবন বাঁচাতে পারে — এটুকু বিশ্বাস নিয়ে আজ এসেছি।”
দুঃসময় ও মানবিক বিপর্যয়ের মুহূর্তে তাদের এই সহমর্মিতা বহু মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ছবিতে দেখা যাচ্ছে — তারা হাসপাতালের রক্তদান কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে আছেন, হাসিমুখে হাতে ধরা রক্তদানের কাগজ।
মানবতার এই দৃষ্টান্ত মনে করিয়ে দেয় — সহানুভূতির কোনো লিঙ্গ পরিচয় নেই, নেই কোনো সামাজিক বিভাজন। শুধু একটি মানবিক মন চাই।
তাদের বার্তা স্পষ্ট:
“আমরা তৃতীয় লিঙ্গের হলেও দেশেরই মানুষ। বিপদের সময় আমরা পাশে ছিলাম, আছি, থাকব।”


কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷