ইচ্ছে করেই অভিনয়ে ঘাটতি রেখেছেন জয়া আহসান!
ইচ্ছে করেই অভিনয়ে ঘাটতি রেখেছেন। তিনি আর কেউ নন। ঢাকা ও কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। সেরা অভিনেত্রী হিসেবে চারটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, সাতটি মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ও দুটি ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড (কলকাতা) যার ঝুড়িতে, তিনি কিনা ইচ্ছে করেই অভিনয়ে ঘাটতি রাখলেন? কলকাতায় মুক্তিপ্রাপ্ত বিনিসুতোয় সিনেমার পরিচালক, অভিনেতার সঙ্গে অনলাইন আড্ডায় এমনটাই জানালেন জয়া আহসান। জানালেন কারণও।
মহামারীর ধাক্কা সামলে ২০ আগস্ট কলকাতায় মুক্তি পায় বিনিসুতোয়। ছবিটি পরিচালনা করেছেন ময়ূরাক্ষী ও রবিবার সিনেমার পরিচালক অতনু ঘোষ। জয়ার সঙ্গে অভিনয় করেছেন কলকাতার ভিন্নমাত্রার অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী। মুক্তির ৫০ দিন পরও সিনেমাটি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনী চলছে। সিনেমার নানা দিক নিয়ে অনলাইন আড্ডার আয়োজন করে ‘প্রহর’। শ্রাবন্তী ঘোষের সঞ্চালনায় ‘বিনিসুতোয় আড্ডা’ শিরোনামের এ অনলাইন লাইভে যুক্ত ছিলেন জয়া আহসান, পরিচালক অতনু ঘোষ ও অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী।
এ অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে জয়া আহসান বলেন, ‘আমি যখন এ চরিত্রে অভিনয় করতে গেছি, বারবার সচেতনভাবে খেয়াল করেছি শ্রাবণীর অভিনয়ে যেন কমতি থাকে। অভিনয়টা যেন পুরোপুরি না হয়। জয়া আহসান তো শ্রাবণী বড়ুয়ার চরিত্র করছেন। শ্রাবণী বড়ুয়া আরেকটি শ্রাবণী চরিত্রে অভিনয় করছেন। সেখানে ভুল-ভ্রান্তি, হ্যাজিটেশন সবকিছুই থাকবে। সেই অভিনয়টায় যেন ঘাটতি থেকে যায়। সেই অভিনয়টা যেন তুখোড় না হয়। এ দুটো বিষয় মাথায় রেখেই আমরা বিনিসুতোয় করেছি।’
একই পরিচালকের রবিবার সিনেমায় সায়নী চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। রবিবারের সায়নীর সঙ্গে বিনিসুতোয়ের শ্রাবণীর পার্থক্য জানতে চাইলে জয়া আহসান বলেন, ‘যদি চরিত্রের বাহ্যিক দিকটা দেখি, এর আগের সায়নী তীক্ষ� বুদ্ধিমতী। সবকিছু সে নিজের মতো করে চায়। তার অনুভূতিগুলো তীব্র। অন্যদিকে শ্রাবণী বড়ুয়ার চরিত্রটা খুবই অদ্ভুত। আমরা সবাই কমবেশি এ চরিত্র যাপন করতে চাই। আমাদের ভেতরে এমন কিছু আকাঙ্ক্ষা লুকিয়ে থাকে কিন্তু এর প্র্যাকটিস বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করা হয়ে ওঠে না। সেই জায়গা থেকে এ চরিত্রে নিজের স্বরূপ সন্ধান করা যায়, চরিত্রটি তা অনেক বেশি মাত্রায় করে। শ্রাবণী চরিত্রের অনেক লেয়ার আছে। খুব সহজে চরিত্রটি সাদা, কালো নাকি গ্রে, তা বলা যায় না। এ চরিত্রের আত্মা পুরোপুরি অন্য রকম। সে সবসময় নিজেকে খোঁজে।’
জয়ার বিপরীতে অভিনয় করা ঋত্বিক চক্রবর্তীর চরিত্রের নাম কাজল। এ চরিত্র নিয়ে জানতে চাইলে তিনিও প্রায় একই কথা বলেন, ‘আমি চেয়েছিলাম চরিত্রটা যখন করব, আমার পারফরম্যান্স যেন নিখুঁত কোনো অভিনেতার মতো না হয়। কাজল যে চরিত্র, আমার আসল জীবন আর কাজল চরিত্র অনেক আলাদা। ফলে কাজ যেটা করবে, সেখানে অনেক ঘাটতি থাকবে। আমি তা-ই করেছি।’
বিনিসুতোয় সিনেমাটি নিয়ে অতনু ঘোষ বলেন, ‘আমাদের সবার জন্য বরাদ্দ একটাই জীবন। একটা জীবনের বাইরে যাওয়ার প্রবণতা আমাদের সবার ভেতরেই থাকে। আমাদের চারপাশটা খুব সহজ নেই, জটিল হয়ে গেছে। আমরা নানাভাবে বাঁচতে চাই। পরিবর্তিত জীবন নিয়ে বাঁচা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা দিক। এর আগে আমি ময়ূরাক্ষী করেছি। রবিবার করেছি। কিন্তু বিনিসুতোয় সিনেমায় একেবারেই অপরিচিত দুটি চরিত্র নিয়ে এসেছি। কাজল ও শ্রাবণী। এ দুটো চরিত্রেরই ভীষণ রকম গভীরতা রয়েছে। তারা একেবারে উল্টোমুখী।’
কাজল ও শ্রাবণীর দেখা হয় একটি রিয়ালিটি শোয়ের মাধ্যমে। সেখান থেকেই তাদের বন্ধুত্বের শুরু। শ্রাবণী একদিন দুর্ঘটনায় পড়ে, তখন কাজল তাকে দেখাশোনা করে। এমন মানবিক সম্পর্কের জটিল বিষয় কীভাবে গাঁথা হয়, সে গল্পই বিনিসুতোয় উঠে আসবে।
ঋত্বিক আর জয়া ছাড়াও সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন চান্দ্রেয়ী ঘোষ, কৌশিক সেন, রেশমি সেন, খেয়া চট্টোপাধ্যায়সহ অনেকে। বিনিসুতোয় সিনেমার একটি গানেও কণ্ঠ দিয়েছেন জয়া আহসান। অভিনয়ের পাশাপাশি গানের জন্যও প্রশংসিত হয়েছেন জয়া আহসান।
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷