অনিশ্চয়তার সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ার ইতিবাচক ব্যবহার
ব্র্যান্ড হিসেবে যেকোনো জটিল সময়ে আপনি কী করতে পারেন? কোভিড-১৯ মহামারীতে অনলাইনে বিজনেসের গুরুত্ব আরও বেড়ে গেছে। অনলাইনে নিজেদের সরব উপস্থিতি জানান দেয়াকে বর্তমানে সব বিজনেসই অগ্রাধিকার দিচ্ছে। কারণ এই সময়টাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রেতাদের সাথে দ্রুত ও কার্যকরভাবে যোগাযোগ স্থাপন করা যাচ্ছে।
এই সময়ে ব্র্যান্ড বা অনলাইন বিজনেস হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়াকে কীভাবে কাজে লাগাবেন তা জেনে নিতে পারেন আজকের লেখা থেকে।
.
# আপনার পণ্য প্রাসঙ্গিক কিনা খেয়াল করুন
ডিসকাউন্ট দেয়ার আগে আপনার পণ্যটি এই মুহূর্তে কাজে আসবে কিনা সেটা সবসময় নিজেকে জিজ্ঞেস করুন। নিজের ইন্ডাস্ট্রির বিভিন্ন বিষয়ে ক্রেতাদের সাহায্য ও পরামর্শ দিয়ে পাশে থাকার চেষ্টা করুন। তাহলে আপনার ওপর ক্রেতাদের ভরসা বাড়বে।
.
# সততা ও মানবতা দেখান
সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার যদি অনেক ফলোয়ার থাকে, তাহলে তাদের মাঝে কীভাবে ইতিবাচকতা ছড়িয়ে দেয়া যায় তা ভাবুন। একটি ইতিবাচক মেসেজ পাঠাতে বেশি কিছুর প্রয়োজন হয় না। আপনার যদি হাজার হাজার ফলোয়ার থাকে, তাহলে আপনার যেকোনো পদক্ষেপই তাদের ওপর প্রভাব ফেলবে, অনেকের জীবনে পরিবর্তনও আসতে পারে।
আপনিও অন্যদের মতো একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন এটা যখন সবাই দেখবে, তারা আপনার সাথে এক ধরনের সংযোগ অনুভব করবে।
সকালের চায়ের বিরতি নিয়ে একটা পোস্ট দিতে পারেন। কিংবা তিন সন্তান নিয়ে জুমে বিজনেস মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করতে হিমশিম খাচ্ছেন সেটা নিয়ে মজার একটা পোস্ট দিতে পারেন। আপনার জীবনের ছোটখাটো বিষয়গুলির একটা ঝলক অনেকের মুখেই হাসি ফোটাতে পারে।
.
# ঘরে তৈরি কন্টেন্ট সহজেই দর্শকদের আকৃষ্ট করবে
সামাজিক দূরত্বের কারণে আমরা কেউই কারো খুব কাছাকাছি যেতে পারছি না। কিন্তু মানুষের সাথে মানুষের স্বাভাবিক যোগাযোগের আগ্রহ এতটাই বেশি যে আমরা সেই দূরত্বটা ঘুচিয়ে ফেলার কোনো না কোনো উপায় খুঁজে বের করে ফেলি। তাই, ঘরেই কন্টেন্ট তৈরির এখনই সবচেয়ে সেরা সময়।
আর্টিফিশিয়াল, অস্বাভাবিক কন্টেন্ট এখন ক্রেতাদের আকর্ষণ করবে না। কর্পোরেট ব্যক্তিত্বকে এখন একটু সরিয়ে রেখে সত্যিকারের গল্প বলার চেষ্টা করুন। যেসব ব্র্যান্ড এই পথ বেছে নেয়, সবাই তাদের সাথে সংযুক্ত থাকার চেষ্টা করে।
.
# সবার সাথে সংযুক্ত থাকুন
সোশ্যাল মিডিয়ায় অর্থপূর্ণ কন্টেন্ট শেয়ার করার পাশাপাশি সবার সাথে যোগাযোগ ধরে রাখাটাও গুরুত্বপূর্ণ। একারণেই এর নাম ‘সোশ্যাল’ মিডিয়া। কাস্টমার সাপোর্ট, যেকোনো প্রশ্ন, খবরা-খবর কিংবা কোনো বিজনেস সংক্রান্ত ফিডব্যাক শেয়ারের জন্য সবাই প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়াকেই বেছে নেয়। তাই, সোশ্যাল মিডিয়ায় সবচেয়ে বেশি ‘মেনশন’ থাকা, প্রাসঙ্গিক কমেন্টে অংশগ্রহণ করা, ইন্ডাস্ট্রির বিভিন্ন খবর শেয়ার করা এবং অপ্রাসঙ্গিক আলাপ-আলোচনা থেকে দূরে থাকলেই সোশ্যাল মিডিয়ার যোগাযোগ কৌশলকে কাজে লাগাতে পারবেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের উপস্থিতি জানান দেয়া বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। নিয়মিত বিজনেস সংক্রান্ত আপডেট দিন। নিজের বাগান, ঘরের ওয়ার্ক আউট সেট আপ, লাইফস্টাইলে হেলদি কী যুক্ত করলেন সবকিছু নিয়েই পোস্ট দিতে পারেন।
পাশাপাশি অন্যদের সাথেও নিয়মিত যোগাযোগ করুন। এই ধরনের যোগাযোগের ফলে দর্শকরা আপনার বিশ্বস্ততার পরিচয় পাবে এবং আপনার পরিচিতি বাড়বে। এর ফলে আপনার ব্র্যান্ডের ব্যক্তিত্ব ফুটে উঠবে। অন্যান্য বিজনেসও কাস্টমার কেয়ার বিষয়ে অনেক কিছু শিখতে পারবে।
.
# ছবি খুব গুরুত্বপূর্ণ
কন্টেন্টের সাথে একটি ছবি সংযুক্ত থাকলে সেটি বেশি মানুষের কাছে পৌঁছায়। কেন? কারণ একটা লেখার চেয়ে ছবি দেখা ও বোঝা অনেক বেশি সহজ, বিশেষ করে নিউজফিড স্ক্রলিং-এর সময়।
ব্র্যান্ডগুলিকে প্রাসঙ্গিক ও আকর্ষণীয় ভিজ্যুয়াল নির্বাচনের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিবাচকতার প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি।
সাধারণ লেখার চেয়ে একটি ছোট ভিডিও মানুষের মনে বেশি ছাপ ফেলবে। এই অনিশ্চয়তার সময়ের সাথে আপনার বিজনেস কীভাবে মানিয়ে চলছে সেটি দেখানোর দারুণ উপায় এটা।
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷