একঝাঁক তারকা নিয়ে ‘দামাল’
একটা সময় ঢালিউডের সিনেমার ছোট বড় সব ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতেন দর্শকের পছন্দের তারকারা। সিনেমার প্রতিটি অংশের সঙ্গে সহজে একাত্ম হয়ে যেতে পারতেন দর্শক। কিন্তু আজকাল সিনেমায় সেভাবে তারকাশিল্পীর সংযোগ দেখা যায় না। নায়ক-নায়িকা, বড়জোড় প্রধান ভিলেনকে চিনতে পারেন দর্শক, বাকি সবাই অচেনা। সিনেমার বাজেট কমে যাওয়ার কারণে একঝাঁক তারকাশিল্পী নিয়ে কাজ করতে চান না নির্মাতারা। কিন্তু তরুণ নির্মাতা রায়হান রাফী তার নতুন সিনেমা ‘দামাল’-এ হাজির করছেন একঝাঁক তারকাকে। সিনেমার গল্প তারুণ্যনির্ভর বলেই এমন কাস্টিং করতে পেরেছেন নির্মাতা। অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে আছেন সিয়াম আহমেদ, বিদ্যা সিনহা মিম, শরিফুল রাজ, সাঈদ বাবু, রাশেদ মামুন অপু, শাহনাজ সুমী, লাক্স তারকা অথৈ ও বৃষ্টি প্রমুখ। রাফী বলেন, ‘দামাল-এর গল্প মুক্তিযুদ্ধ ও সেই সময়ের স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলকে ঘিরে। আগামীকাল থেকে দিনাজপুরে ছবির শ্যুটিং শুরু হচ্ছে। টানা শ্যুটিং করে আমরা সিনেমার পুরো কাজ শেষ করতে চাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘দামাল কোন নায়ক-নায়িকা নির্ভর সিনেমা নয়। এখানে প্রতিটি চরিত্র সমান গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি চরিত্রের আলাদা আলাদা গল্প আছে, পরিনতি আছে। তাই আমি চেয়েছি প্রতিটি চরিত্রে শিল্পী নির্বাচনের ক্ষেত্রে অডিশন নিতে। যারা চরিত্রের সঙ্গে মানানসই তাদেরকেই নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক শিল্পীর ওপর জাস্টিস করা হবে সিনেমায়।’
ফরিদুর রেজা সাগরের কাহিনীতে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত এই ছবির পরিচালক রায়হান রাফীর সঙ্গে যৌথভাবে চিত্রনাট্য করেছেন নাজিম উদ দোলা। ছবির শ্যুটিং শুরুর আগে গত রবিবার ঢাকার বনানীতে শিল্পী পরিচিতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। ফুটবল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত ‘দামাল’ সিনেমায় কাজ করতে পেরে উচ্ছ্বসিত মিম। তিনি বললেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে এর আগে অনেক ছবি তৈরি হয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে ছবিতে মুক্তিযুদ্ধ ও ফুটবল তুলে ধরা হয়নি। ‘দামাল’ ছবির গল্পে যে ঐতিহাসিক ঘটনা তুলে ধরা হচ্ছে, তা নিয়ে আগে কখনো কাজ হয়েছে বলে আমার জানা নেই। এমন একটি গল্পে কাজের সুযোগ পাওয়াটা আমার অভিনয় জীবনে নতুন কিছু যোগ করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি যেহেতু মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, ফলে সে সময়ের মেয়েদের মনোভাব কেমন তা বোঝার চেষ্টা করেছি। আমাদের লুক সেট হয়েছে। তখনকার মেয়েরা এখনকার মেয়েদের মতো অতো বেশি আউটস্পোকেন না হলেও দেশপ্রেমের জায়গা সব সময় ছিল। আমার চরিত্রটিও তেমন। মেয়েটি কিছুটা প্রতিবাদী। আমি চেষ্টা করব সেই বিষয়টি মাথায় রেখে অভিনয় করতে।’
সিয়াম আহমেদ বলেন, ‘সিনেমার গল্প এগোবে ফুটবল ও মুক্তিযুদ্ধকে পাশাপাশি রেখে। মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক সিনেমা আমি কখনো করিনি। তাই নতুন অভিজ্ঞতা হবে। আমাদের সবাইকে ১৯৭১-এ মফস্বলের তরুণদের লুকে দেখা যাবে।’
জানা গেছে, ‘দামাল’ সিনেমায় সব মিলিয়ে শ পাঁচেক শিল্পী কাজ করবেন। এই ছবির ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসার আবু শাহেদ ইমন। তিনি বললেন, ‘করোনার সময়ে সিনেমায় লগ্নি এবং সিনেমা ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবস্থাপনা জটিল একটা জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ইমপ্রেস টেলিফিল্ম একটু বড় ধরনের প্রকল্প করতে চায়। আগামী বছর স্বাধীনতার ৫০ বছর। মুক্তিযুদ্ধের একটা অনন্য দলিল হচ্ছে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। এই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সঙ্গে সমসাময়িকভাবে আরও কিছু গল্পের মিশেলে ‘দামাল’ গল্পটা লেখা হয়েছে। আমি আশাবাদী এই ছবি নিয়ে। যদিও আমরা একটা চ্যালেঞ্জিং সময়েই শ্যুটিং করছি। এরপরও চেষ্টা থাকবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজটি শেষ করতে পারব। তিন মাস ধরে এই ছবির প্রস্তুতি চলছে।’
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷