ক্যারিয়ারে এগিয়ে থাকার জন্য কিছৃ টিপস
চাকরি করবেন না ব্যবসা তা আপনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। কিন্তু যে কাজই করুন, সবার চেয়ে এগিয়ে থাকতে চাইলে সচেতনভাবে কিছু বাড়তি কাজ করতে হবে। যেমন নিজেকে কীভাবে কোথায় প্রেজেন্ট করবেন তা দিয়েই নির্ধারিত হবে মানুষ আপনার সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী হবে কিনা। এছাড়া আরো অনেক ব্যাপার আছে, যা মাথায় রেখে একের পর এক কাজ করে গেলে অন্য সবার চাইতে আপনি সবসময় একধাপ এগিয়ে থাকবেন।
১. সবসময় একটা আপডেটেড সিভি রাখুন
একটা ভালো সিভি বা রেজ্যুমে ছাড়া সামনে আসা সুযোগ কাজে লাগাতে পারবেন না। নারীদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্যারিয়ার সংক্রান্ত উপদেশ হচ্ছে বর্তমান জব মার্কেটে আপনাকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তুলে ধরবে এমন একটা রেজ্যুমে লিখুন। একটা আপডেটেড, আধুনিক রেজ্যুমে বানান। সবশেষে আবেদনপত্র সম্পূর্ণ করতে একটা কভার লেটার লিখে ফেলুন, যেখানে আপনার নতুন রেজ্যুমের অসাধারণ ডক্যুমেন্টসগুলির ওপর বিশেষ জোর দেয়া হবে।
২. ইউনিক পার্সোনাল ব্র্যান্ড তৈরি করুন
নারীদের জন্য ক্যারিয়ার সংক্রান্ত আরেকটি সেরা উপদেশ হলো, ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড গড়ে তোলা। একটি অসাধারণ ও ইউনিক পারসোনাল ব্র্যান্ড ও মর্যাদা আপনার সামনে নতুন অনেক সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিবে।
তাছাড়া কাজের ক্ষেত্রে সুখ্যাতি ও পরিচিতি থাকলে যদি কখনো চাকরি হারানও, খুব তাড়াতাড়িই নতুন চাকরি পেয়ে যাবেন। নিজের পরিচিতি বাড়ান এবং অনন্য দক্ষতা ও অর্জনগুলি স্পষ্টভাবে তুলে ধরুন। ক্যারিয়ারের গল্পটা সংক্ষিপ্ত কিন্তু আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করুন।
৩. নেটওয়ার্ক তৈরি করুন
নিজের অর্গানাইজেশনের ভেতরে ও বাইরে নেটওয়ার্ক তৈরি করুন, যাতে কখনো পরিস্থিতি বদলালেও আপনার কাছে বিকল্প থাকে। কোনো প্রজেক্টের ক্ষেত্রে যেন সবার মাথায় আপনার নাম আসে সেই চেষ্টা করুন। আপনার জন্য ভালো এমন মানুষের সাথে পরিচিত হোন এবং কাজের মাধ্যমে তাদের মনে জায়গা তৈরি করুন। একটা শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হলে এর পেছনে যথেষ্ট শ্রম ও সময় দিতে হবে।
৪. ফিডব্যাক জানতে চান
নারীদের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ হচ্ছে, সবসময় ফিডব্যাক বা প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া। উন্নতি করার একমাত্র উপায় হচ্ছে কোথায় উন্নতি করতে হবে তা জানা। ফিডব্যাক আপনাকে সবার প্রত্যাশা পূরণে সাহায্য করবে। তাছাড়া এর মাধ্যমে আপনার উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে এমন ভুল বোঝাবুঝিও এড়ানো সম্ভব। যারা নিয়মিত ম্যানেজমেন্ট-এর ফিডব্যাক জানতে চান এবং সেগুলি কাজে প্রয়োগ করেন, তারাই সচরাচর সেরা পারফরমার হয়ে থাকেন।
৫. নতুন চ্যালেঞ্জ নিন
আপনাকে যদি এমন কিছু করতে বলা হয় যেটা নিয়ে আপনার উৎসাহ আছে, কিন্তু কাজটা সঠিকভাবে করতে পারবেন কিনা তা নিশ্চিত না, তাহলে হ্যাঁ বলে দিন। কীভাবে করবেন সেটা পরে ভাবুন। নতুন কিছু চেষ্টা করায় আত্মবিশ্বাস রাখুন। নতুন নতুন জিনিস করতে গিয়েই অনেক কিছু শেখা হয়ে যাবে আপনার।.
৬. আত্মবিশ্বাসী হোন
আপনি নিজে যত বেশি আত্মবিশ্বাসী ও পারদর্শী হবেন, অন্যরাও আপনাকে তত বেশি ভরসা করবে। নিজেকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরুন এবং কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে তা চাইতে শিখুন।
কথা বলার গতি এমন রাখুন যাতে সবাই আপনার প্রতিটা কথার প্রতিটা শব্দ বুঝতে পারে। আমরা অনেকে স্বভাবতই তাড়াতাড়ি কথা বলি। অনেকেই নার্ভাস হয়ে গেলে তাড়াতাড়ি কথা বলেন। তাড়াতাড়ি কথা বললে অনেক সময় মানুষ সেটাকে কর্তৃত্ব ও আত্মবিশ্বাসের অভাব হিসেবে ধরে নেয়।
৭. অধ্যবসায়ী হোন
যদি চাকরি বা পদোন্নতি চান, তাহলে হাল ছাড়বেন না। মাঝে মাঝে সবকিছু আমাদের মনমতো হয় না, কিন্তু একবার লক্ষ্য নির্ধারণ করে ফেললে সেটা নিয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হোন। লক্ষ্যটি লিখে রাখুন, নিয়মিত সেটি রিভিউ করুন এবং অর্জন করতে কাজ করুন, প্রয়োজনে অন্যের সাহায্য নিন।
৮. নিজেকে এমনভাবে গড়ে তুলুন যাতে সবাই আপনার সাথে কাজ করতে আগ্রহী হয়
আপনি যদি প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কাজ করেন, তাহলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তার স্বীকৃতি পাবেন। সততা ও উদারতার সাথে কাজ করুন। আপনি সবচেয়ে বেশি যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি হতে পারেন, কিন্তু মানুষ যদি আপনাকে বিশ্বাস না করে, পছন্দ না করে, তাহলে সফল হওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
৯. ক্যারিয়ার নিয়ে পরিকল্পনা করুন
নারীদের জন্য ক্যারিয়ার প্ল্যানিং বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পুরুষের তুলনায় নারীকে ক্যারিয়ারে চ্যালেঞ্জ বেশি ফেইস করতে হয়। ক্যারিয়ারের লক্ষ্য বিস্তারিতভাবে প্ল্যান করা থাকলে অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ সহজ হবে, পাশাপাশি পরিস্থিতি পরিবর্তন হলে প্ল্যানেও সহজে পরিবর্তন আনা যাবে।
১০. একজন পরামর্শদাতা খুঁজে বের করুন
বেশিরভাগ সফল নারী যারা লক্ষ্যে পৌঁছেছেন এবং অন্যদের প্রভাবিত করার মতো অবস্থানে আছেন, তারা নিজেদের সফলতার পেছনে কোনো না কোনো মেন্টর-এর অবদান স্বীকার করেন।
সিনিয়র নারী কর্মীরাই আপনার সেরা মেন্টর বা পরামর্শদাতা হতে পারে। আপনার সংস্থার সিনিয়র নারী কর্মীদের সাথে পরিচিত হওয়ার চেষ্টা করুন। তাদের সাথে আপনার আগ্রহের বিষয় মিলে গেলে সহজেই বন্ধুত্ব হয়ে যাবে।
১১. সেল্ফ প্রোমোট করুন
অনেকেই নিজের অর্জন নিয়ে কথা বলতে অস্বস্তি বোধ করেন। এতে করে অনেক সময় অনেক সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাবে আপনার। এর অনেক উপায় আছে। যেমন, আপনার বস ও তার বসকে কোনো প্রোজেক্টের অগ্রগতি কিংবা কোনো অর্জনের কথা জানিয়ে প্রতিমাসে একটা ইমেইল পাঠাতে পারেন। এতে আপনার আন্তরিকতাও প্রকাশ পাবে, আপনার অগ্রগতিও বসদের চোখে পড়বে।
Source: #ক্যারিয়ার #জব #নারী
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷